স্ট্রেস বেশিরভাগ মানুষ জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে অনুভব করে। কিছু মানুষের জন্য স্ট্রেস তাদের সময়মতো কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। তবে, অনেকের জন্য এটি অতিরিক্ত চাপ হয়ে দাঁড়ায়, যা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় প্রভাব ফেলে। যদি স্ট্রেস আপনার জীবনে সমস্যা তৈরি করতে শুরু করে তাহলে তার লক্ষণগুলি চিহ্নিত করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ। না হলে এটি ধীরে ধীরে আপনার মস্তিষ্ক ও হার্টের অনেক জটিল রোগ তৈরি করবে যা আপানর আয়ু অনেকটাই কমিয়ে দিবে।
কিভাবে বুঝবেন আপনি স্ট্রেসে ভুগছেন
স্ট্রেস শারীরিক, মানসিক এবং আচরণগত বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। অনেক সময় এটি বোঝা কঠিন যে স্ট্রেসই এই আপনার শারীরিক সমস্যার মূল কারণ। নিচে কিছু লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হলঃ
শারীরিক লক্ষণসমূহ:
- মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা
- মাংসের টান বা ব্যথা
- পেটের নানা রকম সমস্যা
- বুকের ব্যথা বা দ্রুত হৃদস্পন্দন
- যৌন সমস্যা
মানসিক লক্ষণসমূহ:
- মনোযোগের ঘাটতি
- সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা
- সমসময় চাপ অনুভব করা
- সবসময় উদ্বিগ্ন থাকা
- ভুলে যাওয়া
আচরণগত পরিবর্তনসমূহ:
- খিটখিটে মেজাজ এবং সহজে রেগে যাওয়া
- অত্যধিক ঘুমানো বা কম ঘুমানো
- বেশি খাওয়া বা কম খাওয়া
- নির্দিষ্ট স্থান বা মানুষকে এড়িয়ে চলা
- ধূমপান, মদ্যপান বা অন্যান্য আসক্তি বাড়িয়ে তোলা
স্ট্রেস মোকাবিলার কৌশল
আপনি যা করতে পারেন:
- বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা কাছের কোন মানুষের সাথে কথা বলুন। কি কাজে প্রেশার অনুভব করছেন খুঁজে বের করুন। এতে কিছুটা ভাল বোধ করবেন।
- প্রেশারের কাজ গুলো কে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলুন। আগাম পরিকল্পনা করুন। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজগুলো অল্প অল্প করে শেষ করতে থাকুন। প্রয়োজনে কোন পেশাদারের সাহায্য নিন।
- যারা একই ধরনের স্ট্রেসের মুখোমুখি হয়েছেন তাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন । হয়ত মূল্যবান কোন পরামর্শ পেতে পারেন।
- হাজার মানুসিক চাপে থাকলেও নিজের শরীর ও মনের যত্ন নিবেন। এটা আপানর চাপ মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে
- স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ এবং মানসিক সুস্থতা বাড়ানোর জন্য অনেক বিনামূল্যে অডিও গাইড পাওয়া যায় তা শুনুন। আপনাকে চাপ মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে।
যা এড়িয়ে চলা উচিত:
- নিজেকে খুব বেশি কাজের চাপে ফেলবেন না। ছোট, অর্জনযোগ্য লক্ষ্য ঠিক করুন এবং ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি করুন।
- আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দেওয়া চাপ বাড়ায়। পরিবর্তে, আপনি যা পরিবর্তন করতে পারেন এবং আপনার পরিস্থিতি উন্নত করার উপায়গুলোর উপর মনোযোগ দিন।
-মনে রাখবেন, আপনি একা নন। অনেক মানুষই জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্ট্রেসের সম্মুখীন হয় এবং সহায়তা পাওয়া যায় যদি আপনি তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত হন।
- অ্যালকোহল, ধূমপান, জুয়া বা ড্রাগের আশ্রয় নেওয়া সাময়িক মুক্তি দিতে পারে, কিন্তু এগুলো দীর্ঘমেয়াদে আরও সমস্যা তৈরি করে।
মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়
স্ট্রেসের কারণ বোঝা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণঃ
স্ট্রেস মানসিক বা আবেগজনিত চাপের কারণ বুঝলে তা দুর করা খুব সহজ হয় । স্ট্রেসের খুব সাধারণ কারণগুলো হলো:
- কাজের চাপ, বেকারত্ব বা অবসর
- সম্পর্কের জটিলতা
- পরিবারের অতিরিক্ত দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়া
- আর্থিক সমস্যা বা অপ্রত্যাশিত ব্যয়
- স্বাস্থ্য সমস্যা বা প্রিয়জনের মৃত্যু
- বাড়ি কেনা, সন্তান নেওয়া বা বিয়ে পরিকল্পনার মতো বড় জীবনের ঘটনা
এমনকি ইতিবাচক ঘটনাগুলিও স্ট্রেসের কারণ হতে পারে। আপনার স্ট্রেসের মূল কারণ চিহ্নিত করা আপনার তা মোকাবিলা করার কৌশল গ্রহণে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
যেভাবে সুখে থাকার ১০০% গ্যারান্টি পাবেন
মন ভাল করার ১০টি উপায়
বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার
0 মন্তব্যসমূহ