সুখে থাকার ১০০% গ্যারান্টি
সুখে থাকতে মন কে সুস্থ রাখুন আগে। আমরা টাকা বাড়ি গাড়ি সম্মান এসবের পিছে দৌড়াতে গিয়ে মনের কথা ভুলে যাই। কিন্তু মন সুস্থ না থাকলে আপনি অর্থ বা সুস্বাস্থ্য কিছুই উপভোগ করতে পারবেন না। । গবেষণা বলছে, দৈনন্দিন জীবনে কিছু সাধারণ ধাপ অন্তর্ভুক্ত করলেই এগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে। নিচে ধাপগুলো নিয়ে কিছু আলোচনা করা হলঃ
১. পরিবার , বন্ধুদের সময় দিন ও সামাজিক কাজ করুনঃ
মানুষ সামাজিক জীব, আর ভালো সম্পর্ক মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ বাড়ায় এবং ইতিবাচক থাকতে সহায়তা করে । অর্থপূর্ণ সম্পর্কগুলো আমাদের আবেগকে শক্তি যোগায় যা আমাদের বিভিন্ন কঠিন সময় পার করতে সহায়তা করে ।
যেভাবে এই কাজ গুলো করতে পারেন
- পরিবারের সঙ্গে দিনের একটা সময় হলেও কাটান। যেমন একসাথে খাবার খাওয়া।
- দীর্ঘদিন ধরে দেখা হয়নি এমন বন্ধুদের সাথে একটি দিন কাটানোর পরিকল্পনা করুন।
- স্ক্রিন বন্ধ করে শিশু, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন বা খেলা খেলুন।
- কোনো সহকর্মীর সঙ্গে লাঞ্চ করুন বা সাহায্যের প্রয়োজন এমন প্রিয়জনকে দেখে আসুন।
- স্থানীয় স্কুল, হাসপাতাল বা কমিউনিটি গ্রুপে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করুন।
- দূরে থাকা পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিন, যেমন ভিডিও-চ্যাট ব্যবহার করুন।
যা করবেন নাঃ
- শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যম বা মেসেজিং অ্যাপের ওপর নির্ভর করবেন না। সম্পর্ক গড়তে সরাসরি যোগাযোগের বিকল্প নেই।
২। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন
শারীরিক কার্যকলাপ কেবল শরীরের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও দরকার । ব্যায়াম আত্মসম্মান বাড়ায়, লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনে সহায়ক হয়, এবং মস্তিষ্কে এমন রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায় যা মেজাজ ভাল করে ।
সক্রিয় হওয়ার উপায়:
- ফিটনেস বাড়ানোর জন্য দৌড়ানো বা সাঁতারের মতো ব্যায়াম শুরু করুন।
- প্রতিদিন সম্ভব না হলেও সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন অন্তত ত্রিশ মিনিট করে শরীরকে সময় দিন।
যা করবেন নাঃ
দীর্ঘ সময় ধরে জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এমন শারীরিক কার্যকলাপ খুঁজুন যা আপনি উপভোগ করেন এবং তা আপনার জীবনের অংশ করে তুলুন।
নতুন কিছু শেখা মানে আপনার ব্রেনকে ব্যায়াম করানো। ব্রেনকে যত ব্যায়াম করাবেন তত আপনার ব্রেন শক্তিশালী হবে। রোগ থেকে দুরে থাকবেন। মানুসিক রোগ আসলে আপনার ব্রেনের কিছু কেমিক্যালের রিয়েকশন। ব্রেন শক্তিশালী থাকলে এসব রিয়েকশন মুক্ত থাকবেনঃ
যেভাবে শিখবেনঃ
- রান্না শেখা বা নতুন নতুন রেসিপি শিখতে পারেন
- কাজের জায়গায় নতুন দায়িত্ব নিন, যেমন নতুন কাউকে পরামর্শ দেওয়া বা উপস্থাপনা দক্ষতা উন্নত করা।
- ঘরের টুকটাক মেরামতের কাজ শিখতে পারেন।
- নতুন ভাষা শেখা বা প্র্যাকটিক্যাল কোন দক্ষতা অর্জনের জন্য কোনো কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
- নতুন ব্লগ লেখা, খেলাধুলা করা বা ছবি আঁকা শেখার মতো সৃজনশীল শখে যোগ দিন।
এড়িয়ে চলুন:
- নতুন যোগ্যতা অর্জন বা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজেকে চাপ দেবেন না যদি তা আপনার আগ্রহের বাইরে হয়। যা আপনাকে আনন্দ দেয়, তা খুঁজে বের করুন।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কি কি করা উচিত?
৪. অন্যদের সাহায্য করুন
গবেষণা বলছে, অন্যদের প্রতি দয়া এবং সাহায্য করার কাজ আপনাকে পুরস্কৃত হওয়ার অনুভূতি দেয়, যা আপনাকে ভাল বোধ করতে সহায়তা করে
সহযোগিতার কিছু উপায়:
- কাউকে ধন্যবাদ জানান তাদের সাহায্যের জন্য।
- বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মীদের সাথে কথা বলুন এবং মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনুন।
- আপনার সময় প্রিয়জনকে দিন যার সাহায্যের প্রয়োজন বা কোনো প্রকল্পে সহযোগিতা করুন।
- স্থানীয় স্কুল, হাসপাতাল বা কমিউনিটি গ্রুপে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করুন।
৫. বর্তমান মুহূর্তের প্রতি মনোযোগ দিন (মাইন্ডফুলনেস)
আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা প্রায়ই বর্তমান মুহূর্তের প্রতি মনোযোগ দিতে ভুলে যাই। মাইন্ডফুলনেস, অর্থাৎ আপনার চিন্তা, অনুভূতি, শরীর এবং আশেপাশের পরিবেশের প্রতি মনোযোগ দেওয়া, জীবনকে আরও গভীরভাবে উপভোগ করতে সহায়তা করে। মাইন্ডফুলনেস আপনাকে স্ট্রেস মোকাবেলায়, আত্মজ্ঞান বিকাশে এবং চ্যালেঞ্জগুলি আরও ইতিবাচকভাবে মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
মাইন্ডফুলনেস চর্চার উপায়:
- মেডিটেশন বা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন। আপানার সাথে আজ পর্যন্ত যা কিছু ভাল ঘটেছে তার জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করুন।
- প্রতিদিন কিছু সময় আপনার চারপাশের পরিবেশ এবং চিন্তাগুলোকে বিচার না করে পর্যবেক্ষণ করুন।
- প্রতিদিনের কার্যকলাপে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন—হাঁটা, খাওয়া বা প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানোর সময় সম্পূর্ণভাবে উপস্থিত থাকুন।
0 মন্তব্যসমূহ